মূলভাব : জন্ম মাত্রই মৃত্যু অনিবার্য; কিন্তু মহৎ কার্যাবলির মাধ্যমে মানুষ জগতে অমরত্ব লাভ করে।
সম্প্রসারিত ভাব : মানুষের জীবন-কাল খুবই সামান্য। একদিন সবাইকেই মৃত্যুবরণ করতে হয়। মৃত্যুর পর তার নাম হারিয়ে যায়। এই সংক্ষিপ্ত মানবজীবন নদীর জলের মতোই প্রবহমান। নদীর জোয়ার-ভাটার মতো মানুষের জীবনেও সুখ-দুঃখ, উত্থান-পতন আছে। জাগতিক নিয়মেই জীবন চলে। এটাই প্রকৃতির নিয়ম। এই চরম সত্যকে মেনে নিয়ে মানবজীবনকে সার্থক করে তুলতে হবে। কর্মগুণে নিজের কীর্তির চিহ্ন রেখে যেতে হবে। নিষ্ফল জীবনের অধিকারীকে কেউ মনে রাখে না। কৃতী লোকের গৌরব জীবনের সীমা অতিক্রম করে অমরতা ঘোষণা করে। কীর্তিমানরা তাঁদের মহৎ কর্মের দ্বারা গৌরবের যে তাজমহল রচনা করেন, তা তাঁদের বাঁচিয়ে রাখে। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁরা পান অজস্র সম্মান, লাভ করেন মানুষের অকুণ্ঠ ভালোবাসা। এভাবে তাঁরা ঠাঁই করে নেন ইতিহাসের অমর পাতায়। কীর্তিমান মানুষের জীবনকে পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, তাঁরা কখনই নিজেকে নিয়ে ব্যতিব্যস্ত থাকেন না। পৃথিবীর উন্নতির জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য তাঁরা এমনই কর্মযজ্ঞ সম্পাদন করে যান, যা দেখে মানুষ বিস্মিত হয়, গৌরবে উদ্দীপ্ত হয়। পরবর্তীকালে মানুষেরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে তাঁদের নাম।
মন্তব্য : মানুষের দৈহিক মৃত্যু হয়, কিন্তু তার জীবনের সৎকর্ম তাকে পৃথিবীতে অমরত্ব দান করে। তখন নশ্বর পৃথিবীতে মানুষের জীবন অবিনশ্বর হয়ে ওঠে।