আস্ক প্রশ্নে আপনাকে স্বাগতম ! এটি একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। এই সাইট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন ...
320 বার প্রদর্শিত
"স্বপ্নের ব্যাখ্যা ও নামের অর্থ" বিভাগে করেছেন (44 পয়েন্ট) 161 589 602

1 উত্তর

0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন (2,796 পয়েন্ট) 162 422 438



বোবায় ধরা সম্পর্কে ইসলাম অত্যন্ত ভালভাবেই দিতে পারে। এর জন্য আসুন জেনে নিই, ইসলামী দর্শন এ বিষয়টিকে কিভাবে ব্যাখ্যা করে।


পৃথিবীতে সৃষ্টিকুলের মধ্যে যেমন দৃশ্যমান মানবজাতি এবং জীব-জন্তু রয়েছে, তেমনি রয়েছে অদৃশ্যমান জ্বীনজাতি ও ফেরেশতাকুল। জ্বীন সম্প্রদায়ের মধ্যেও মানুষের মতো বোবার অস্তিত্ব আছে। সেইসব বোবা জ্বীনদের মধ্য থেকে কতিপয় জ্বীন যখন মানব সমাজে চলে আসে বা বিচরণ করে, তারা অন্যান্য স্বাভাবিক জ্বীনের মতো মানুষের সাথে যোগাযোগ করতে পারে না, আর পারে না অন্যান্য জ্বীনদের সাথেও তাদের মতামত আদান-প্রদান করতে। তাই তারা কখনও কখনও তাদের ইচ্ছেমত মানুষকে বিরক্ত করে। অন্য সময় পারে না বলে ঘুমের সময়টাকেই তারা বেছে নেয়।


কখনও কখনও এই সব বোবা জ্বীন তাদের পছন্দমত মানুষের কাছে আসে এবং ঘুমের মধ্যে তার উপর ভর করে। পছন্দমত বলছি এ কারণে, যেহেতু তারা দুনিয়ার সকল মানুষকেই ধরে না। ফলে অনেক মানুষই বলে থাকে যে, “আমাকে তো কখনই বোবায় ধরে না?” 


► বোবায় ধরলে কী কী অভিজ্ঞতা হতে পারে?


এখানে একটি বিষয় ব্যাখ্যা করা দরকার, তা হলো অনেকের এমন হয়, বোবায় যে ধরেছে, এটা বুঝার পূর্বে তারা অনেক দুঃস্বপ্ন দেখতে থাকেন। তারপর দুঃস্বপ্নের এক পর্যায়ে তারা বুঝতে পারেন, তাদের পুরো শরীরের উপর বা কোনো বিশেষ অঙ্গের (যেমনঃ মাথা, বুক, হাত ইত্যাদি) উপর কেউ ভর করে আছে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে কারও (জ্বীনের) লোমশ হাতের কথাও অনেকে বলে থাকেন। এক এক জনের অভিজ্ঞতা এক এক রকম। যাই হোক, দুঃস্বপ্ন দেখতে থাকার কারণ হলো, ঐসব বোবা জ্বীন স্বল্প সময়ের জন্য মানুষের স্বপ্নকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং তারা সাধারণত দুঃস্বপ্নের মধ্য দিয়ে মানুষকে নিতেই পছন্দ করে যেন ঐ সকল মানুষ স্বপ্নের এক পর্যায়ে আকস্মিক ঘুম ভেঙ্গে উঠে অসহনীয় এবং প্রতিকূল পরিস্থিতি অনুভব করে। তাই এটা বোবা জ্বীনদের মানুষের শরীরের নড়াচড়া করতে না দেয়ার পাশাপাশি আরেকটি কূট-কৌশল।



এটা সচরাচর প্রায় সবার ক্ষেত্রেই ঘটে থাকে যে, এই পরিস্থিতিতে বোবায় ধরা ব্যক্তি নিজের হাত-পা বা দেহের কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নাড়াতে পারে না (চোখের কর্নিয়া ব্যতীত)। এর কারণ খুঁজে দেখা গেছে, বোবা জ্বীনদের এক বিশেষ ক্ষমতা থাকে, যাকে বলা হয় “ব্লাড বেন্ডিং (Blood Bending)”। এ ক্ষমতার দ্বারা তারা মানুষের রক্তের চলাচল পথকে এবং রক্তকণিকাকে স্বল্প সময়ের জন্য নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে পারে। আর রক্তের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে পারে বলেই, দেহের বিভিন্ন স্থানে তারা রক্ততঞ্চন ঘটাতে পারে, ফলে সারা শরীর বা শরীরের নির্দিষ্ট অঙ্গ-প্রত্যঙ্গসমূহ নড়াচড়া করা সম্ভব হয় না। এবং তারা যে সময়টুকু মানুষের উপর ভর করে থাকে, এর চলে যাওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত এ বিশেষ ক্ষমতার প্রয়োগ তারা দেখাতে পারে। এর আরেকটা কারণ হচ্ছে, তারা চায় না, তাদের অদ্ভূদ আকৃতি-প্রকৃতি বা চেহারা কোন মানব দেখুক। আবার ইচ্ছা করলে তারা অদৃশ্যভাবেও মানুষের উপর ভর করতে পারে।



তবে হ্যাঁ, বোবা ধরলে একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত শ্বাস-প্রশ্বাস বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গসমূহ নড়াচড়ায় ব্যাঘাত ঘটলেও মারা যাওয়ার আশংকা নেই। এ পর্যন্ত কোন জ্বীন ঘুমের মধ্যে কাউকে শারীরিকভাবে আঘাত করেছে বা মেরে ফেলেছে বলে শোনা যায় না। আল্লাহ পাক এ বিষয়টি মানুষ এবং জ্বীন সম্প্রদায়ের মধ্যে ভারসাম্য বিধান করে দিয়েছেন। বোবা জ্বীনের কারণে বা বোবায় ধরলে যদি অসংখ্য মানুষ মারা যেত, তাহলে তা মানবজাতির অস্তিত্বের জন্য হুমকিসরূপ হয়ে দাঁড়াত। আবার জ্বীনজাতি দৃশ্যমান হলে, মানুষ তাদেরকে হত্যা করা বা সহজে বশ করার কোনো না কোনো উপায় বের করে ফেলত। এ জন্যই তারা অদৃশ্যমান। এ বিষয়টির ব্যাখ্যা করতে অনেক লেখা-লেখির প্রয়োজন বিধায় এখানে আর আলোচনা অন্য দিকে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করছি না।



► বোবায় ধরা যে জ্বীন দ্বারা সংঘটিত ঘটনা, তার যৌক্তিক প্রমাণঃ



বোবায় ধরা যে জ্বীন দ্বারা ঘটিত একটি ঘটনা (বিজ্ঞান তার ব্যাখ্যা করতে পারুক না না-ই পারুক) তা বুঝা যায়, কোন দরূদ শরীফ বা সূরা ইত্যাদি পড়লে বোবায় ধরার প্রভাবটা আর থাকে না এবং মুহূর্তের মধ্যেই চলে যায়। অনেকের ক্ষেত্রে সাথে সাথে চলে যায়, আবার অনেকের ক্ষেত্রে দোয়া-কালাম পাঠ শুরু করার কিছুক্ষণ পর চলে যায়। এরপর অনেক ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতাপ্রাপ্ত ব্যাক্তি উঠে বসে, আবার অনেকেই ঘামতে থাকে, অনেকে আবার ভয়ে হাঁপাতে থাকে। তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমরা যদি বিশ্বাস করি যে, আমরা আশরাফুল মাখলুকাত, ওরা আমাদের কিছুই করতে পারবে না এবং এক আল্লাহর উপর নির্ভর করি, তাহলে এরকম ঘটনা আমাদের জন্য কোন ব্যাপারই না।



এমনও দেখা গেছে যে, অভিজ্ঞতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি বিছানায় শয়ন করার দু’-এক মিনিটের মধ্যেই (অর্থাৎ, তখনও সে সম্পূর্ণ সচেতন) তার উপর কোনো কিছু এসে ভর করেছে। অর্থাৎ, বৈজ্ঞানিক পরিভাষা স্লিপিং প্যারালাইসিস, যা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে গেলে ঘটতে পারে, এমন যুক্তি এ ক্ষেত্রে অচল হয়ে যায়। আর হ্যাঁ, এ ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি কর্তৃক বোবা জ্বীনকে দেখে ফেলার সম্ভাবনাই তুলনামূলক বেশি, কেননা পুরোপুরি ঘুমিয়ে যায় নি এমন ব্যক্তির উপরে blood bending করা জ্বীনের জন্য দুষ্করই বটে।



বোবা ধরার সময়, বা চলে যাওয়ার মুহূর্তে কেউ কেউ উক্ত বোবা জ্বীনকে দেখে ফেলতে পারেন। এমন হয়েছে যে, জ্বীনের আকৃতি-প্রকৃতি পরিষ্কার বুঝা যায় নি, শুধু কালো বিকট এক আকৃতির অস্তিত্ব উপলব্ধি করা গিয়েছে। আবার এমনও হয়েছে যে, জ্বীনটি তার আসল রূপ বা কোনো কুৎসিত চেহারা নিয়ে অভিজ্ঞতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে দেখা দিয়েই উধাও হয়ে গিয়েছে। তবে জ্বীন দেখা দিয়েছে, এমন ঘটনা দুর্লভ।


► বোবায় ধরলে যা যা করা উচিত, তার মধ্যে কয়েকটি হচ্ছে


১) দরূদ শরীফ পড়তে থাকা।

২) আল্লাহর কালাম অর্থাৎ কুরআনুল কারীমের যে কোন সূরা থেকে আয়াতে পাক পাঠ করতে থাকা। সূরা বাকারা, ইখলাস অথবা ইয়াসীনের আয়াতসমূহ পাঠ করা যেতে পারে।

৩) আয়াতুল কুরসী পাঠ করতে থাকা। এটি অত্যন্ত কার্যকরী।

৪) হুযুরে পাক (সঃ) অথবা কোন নবী বা ওলীর উছিলায় ঐ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাবার জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।


এছাড়াও যাদের পক্ষে সম্ভব হয়, নিজে কোন বিজ্ঞ আলেম ব্যক্তির শরণাপন্ন হয়ে তাঁর থেকে এতদভিন্ন কোন নির্দিষ্ট আয়াতে পাক বা দোয়া জেনে নিতে পারেন।



► বোবায় ধরা থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্তি চাইলে করণীয়:

১) ঘুমানোর আগে অযু করে শোয়া।

২) পুরোপুরি উপুড় হয়ে না শোয়া।

৩) ডান কাত হয়ে শোয়া।

৪) কারও উপুড় হয়ে শোয়ার অভ্যাস সহজে না গেলে, কাঁথা, চাদর বা কম্বল দ্বারা মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢেকে তারপর উপুড় হয়ে শোয়া। তবে ৩ নং আমলটিই অধিকতর শ্রেয় এবং সুন্নত সম্মত।

৫) ঘুমের দোয়াসমূহ পড়ে তারপর ঘুমানো। কি দোয়া পড়ছেন, তার অর্থ জানা থাকলে ভাল। ঘুমের একটি সহজ এবং অধিক পঠিতব্য দোয়া হচ্ছে,

“আল্লাহুম্মা বি-ইস্‌মিকা আমূওতু ওয়া আহ্‌ইয়া।”

অর্থঃ হে আল্লাহ ! তোমারই নামে মৃত্যুবরণ করি, আবার তোমারই নামে জীবন ধারন করি।

৬) দুঃস্বপ্ন দেখে আকস্মাৎ জেগে উঠলে বাম দিকে ফিরে তিনবার “আউযুবিল্লাহি মিনাশ্‌ শাইত্বনির্‌ রাজীম” বলে তিন বার থুথু দেয়া। থুথু দিলে পাশের জায়গা ভিজে যাবার আশংকা থাকলে থুথুর মত করে ফুঁ দেয়া।

৭) শোবার সময় দশ বার করে “লা- হাওলা ওয়ালা- কুয়াতা ইল্লা বিল্লাহ্‌” পাঠ করা।

৮) দুঃস্বপ্ন বা বোবায় ধরার কাহিনী কোনটাই কাউকে না বলা। আর প্রকাশ করলে এমন কারও কাছেই তা করা উচিত যিনি এর সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারেন এবং প্রতিকার বাতলে দিতে পারেন।

৯) ঘরে লেবু রাখা, কেননা যে ঘরে লেবু থাকে জ্বীন সেখানে প্রবেশ করে না।



সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

1 উত্তর
2 টি উত্তর
01 জানুয়ারি 2018 "ইসলাম ধর্ম" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Ayaan (2,796 পয়েন্ট) 162 422 438
1 উত্তর

28,156 টি প্রশ্ন

29,682 টি উত্তর

3,147 টি মন্তব্য

3,947 জন সদস্য



আস্ক প্রশ্ন এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে কমিউনিটির এই প্ল্যাটফর্মের সদস্যের মাধ্যমে আপনার প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান পেতে পারেন এবং আপনি অন্য জনের প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান দিতে পারবেন। মূলত এটি বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি অনলাইনে উন্মুক্ত তথ্যভান্ডার গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য।

  1. Md Rayhan Islm

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  2. Info Blog Bn

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  3. Jahed hussen

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  4. নাজমুল হুদা

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  5. Rayhan hossen

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

শীর্ষ বিশেষ সদস্য

...