আস্ক প্রশ্নে আপনাকে স্বাগতম ! এটি একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। এই সাইট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন ...
350 বার প্রদর্শিত
"বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি" বিভাগে করেছেন (4,388 পয়েন্ট) 275 1556 1592

1 উত্তর

0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন (1,496 পয়েন্ট) 14 32 43


বাংলাদেশ একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিকম্প, নদীভাঙন, টর্নেডো, অগ্নিকাণ্ড, খরা ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে সম্প্রতিককালে নতুন করে যোগ হয়েছে বজ্রপাত। বজ্রপাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমাতে আপাতত সচেতনতামূলক কার্যক্রমের উপর জোর দিচ্ছে সরকার। এ লক্ষ্যে কিছু নির্দেশনাও দিচ্ছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. মোহসীন বলেন, ‘বজ্রপাতের সময়  বিদ্যুত পরিবাহি যেমন ট্রাক্টর, লোহার লাঙল, বাইসাইকেল থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখা। বজ্রপাতের সময় খোলা জায়গা, মাঠ বা উঁচু স্থানে থাকা নিরাপদ নয়। গাছের তলায় থাকা বিপজ্জনক। সম্ভব দালান বা কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিতে হবে। টিনের চালা এড়িয়ে চলতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বজ্রপাতে মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র তৈরি ও প্রদর্শন, ভ্রাম্যমাণ সিনেমা প্রদর্শন ও সচেতনতামূলক গান তৈরি করে জণসাধারণকে সচেতন করা। টেলিভিশনের স্ক্রলে  এবং পত্রিকায় পূর্বাভাসসহ প্রয়োজনীয় বার্তা প্রচার করা। মোবাইল ফোনে এসএমএস, পোস্টার লিফলেট বিতরণ, উঠান বৈঠক, বাস, লঞ্চ, রেলস্টেশনে প্রচার চালানো।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস (ইইই) বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক অশোক কুমার সেনগুপ্ত জানান, বজ্রপাত প্রাকৃতিক ঘটনা। বাংলাদেশে মে-জুলাইয়ে শুষ্ক আবহাওয়ায় বজ্রপাত হয় বেশি। ভরা বর্ষায় বজ্রপাত কম হয়। সাধারণ কিছু সতর্কতা মেনে চললে এই দুর্যোগে মৃত্যুহার কমানো সম্ভব। আমাদের দেশের মতো অনুন্নত দেশে বজ্রপাতে মৃত্যুহার বেশি। কেননা, বাইরে খোলামেলা জায়গায় থাকা কর্মজীবী মানুষের সংখ্যা বেশি। বজ্র নিচের দিকে নেমে আসার অল্পক্ষণ আগে (কেউ বাইরে থাকলে) শরীরের লোম, চুল হঠাৎখাড়া হয়ে উঠতে পারে, যা বজ্রপাতের পূর্ব-লক্ষণ। তখনই দৌড়াদৌড়ি না করে দুই হাঁটুর মাঝখানে মাথা গুঁজে (মাতৃজঠরে থাকা সন্তানের মতো) থাকলে বিপদ এড়ানো যেতে পারে। বজ্রপাতের সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার বিপজ্জনক হতে পারে। ধারে কাছে কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করলেও বিপদের আশঙ্কা আছে।’  

দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শাহ কামাল বলেন, ‘অধিকমাত্রায় বজ্রপাত প্রাকৃতিক দুর্যোগে নতুন মাত্রা। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিশেষজ্ঞ মতামত নিয়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বজ্রপাতের মতো পরিবেশ যেমন আকাশ মেঘাছন্ন হয়ে আসা, বৃষ্টি হতে পারে এমন আবহাওয়া সৃস্টি হতে দেখলে নিরাপদ অবস্থান গ্রহণ করা শ্রেয়। দ্রুত ফাঁকা জায়গা ত্যাগ করা, উঁচু ভবনের ফাঁকা ছাদে না থাকা অপেক্ষাকৃত নিচু ঘরে অবস্থান করা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হতে পারে।’

বজ্রপাত থেকে নিরাপদ থাকতে নিম্ন বর্ণিত নির্দেশনা পালনের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে অনুরোধ করা হয়েছে :
 

  • বজ্রঝড় সাধারণত ৩০-৪৫ মিনিট স্থায়ী হয়। এ সময়টুকু ঘরে অবস্থান করুন।
  • গভীর ও উলম্ব মেঘ দেখা দিলে ঘরের বাইরে বের না হওয়াই উত্তম, অতি জরুরি প্রয়োজনে রাবারের জুতা পরে বাইরে যান।
  • উঁচু গাছপালা, বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তার, ধাতব খুঁটি, মোবাইল টাওয়ার ইত্যাদি থেকে দুরে থাকুন। এ সময় নদী, পুকুর, ডোবা বা জলাশয় থেকে দূরে থাকুন।
  • বজ্রপাতের সময় খোলা জায়গা বা মাঠ অথবা উঁচু স্থানে থাকবেন না।
  • ধানক্ষেতে বা খোলা মাঠে থাকলে তাড়াতাড়ি পায়ের আঙ্গুলের ওপর ভর দিয়ে এবং কানে আঙ্গুল দিয়ে মাথা নিচু করে বসে পড়ুন।
  • বজ্রপাতের আশঙ্কা হলে যত দ্রুত সম্ভব দালান বা কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিন। বজ্রপাতের সম্ভাবনা দেখা দিলে টিনের চালা যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন।
  • বজ্রপাতের সময় গাড়ির ভেতর অবস্থান করলে গাড়ির ধাতব অংশের সাথে শরীরের সংযোগ রাখবেন না। সম্ভব না হলে কোন কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিন।
  • বজ্রপাত চলাকালে বাড়িতে থাকলে জানালার কাছাকাছি ও বারান্দায় থাকবেন না। জানালা বন্ধ রাখুন এবং ঘরের ভিতরে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম থেকে দূরে থাকুন।
  • বজ্রপাতের সময় ধাতব হাতলযুক্ত ছাতা ব্যবহার করবেন না। জরুরি প্রয়োজনে প্লাস্টিক বা কাঠের হাতলযুক্ত ছাতা ব্যবহার করুন।
  • বজ্রপাতের সময় শিশুদের খোলা মাঠে খেলাধুলা থেকে বিরত রাখুন।
  • বজ্রপাতের সময় সমুদ্র বা নদীতে থাকলে মাছ ধরা বন্ধ রেখে নৌকার ছাউনির নিচে অবস্থান করুন। বজ্রপাত ও ঝড়ের সময় টিউব ওয়েল, রেলিং, পাইপ ইত্যাদি স্পর্শ করবেন না।
  • প্রতিটি বিল্ডিংয়ে বজ্রপাত নিরোধক দণ্ড স্থাপন নিশ্চিত করুন।
  • খোলা স্থানে অনেকে একত্রে থাকাকালীন বজ্রপাত শুরু হলে একত্রে না থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অবস্থান করুন।
  • কোন বাড়িতে যদি পর্যাপ্ত বজ্রপাত নিরোধক ও নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা না থাকে তাহলে সবাই এক কক্ষে না থেকে আলাদা আলাদা কক্ষে অবস্থান করুন।
  • বজ্রপাতের সময় মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, টিভি, ফ্রিজসহ বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির সুইচ বন্ধ রাখুন এবং বজ্রপাতের আভাস পেলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখুন।
  • বজ্রপাতে কেউ আহত হলে বৈদ্যুতিক শকে আক্রান্তদের মতো দ্রুত চিকিৎসা করতে হবে, প্রয়োজনে দ্রুত চিকিৎসককে ডাকুন বা হাসপাতালে নিয়ে যান।
  • বজ্রপাতে আহত ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস ও হৃদস্পন্দন ফিরিয়ে আনার চেষ্টা অব্যাহতভাবে চালিয়ে যান, প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

 

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

1 উত্তর
04 মে 2018 "নিত্য নতুন সমস্যা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Siddique (4,388 পয়েন্ট) 275 1556 1592
1 উত্তর
1 উত্তর

28,156 টি প্রশ্ন

29,682 টি উত্তর

3,147 টি মন্তব্য

3,938 জন সদস্য



আস্ক প্রশ্ন এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে কমিউনিটির এই প্ল্যাটফর্মের সদস্যের মাধ্যমে আপনার প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান পেতে পারেন এবং আপনি অন্য জনের প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান দিতে পারবেন। মূলত এটি বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি অনলাইনে উন্মুক্ত তথ্যভান্ডার গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য।

  1. Lovely Yeasmin

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  2. Saddam007

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  3. Provas

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  4. Website

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  5. শারমিন

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

শীর্ষ বিশেষ সদস্য

...