আস্ক প্রশ্নে আপনাকে স্বাগতম ! এটি একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। এই সাইট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন ...
130 বার প্রদর্শিত
"ইতিহাস এবং ঐতিহ্য" বিভাগে করেছেন (4,388 পয়েন্ট) 276 1563 1592

1 উত্তর

0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন (525 পয়েন্ট) 5 8 41

স্বদেশী আন্দোলন  ভারতে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন। এ আন্দোলন ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ হতে উদ্ভূত হয়ে ১৯০৮ সাল পর্যন্ত চলমান ছিল। এ আন্দোলন ছিল গান্ধী-পূর্ব আন্দোলনসমূহের মধ্যে সর্বাপেক্ষা সফল। প্রাথমিক পর্যায়ে সংবাদপত্রে বিবৃতি প্রদান, অসংখ্য সভা-সমাবেশ অনুষ্ঠিত ও স্মারকলিপি পেশ করে এবং ১৯০৪ সালের মার্চ ও ১৯০৫ সালের জানুয়ারি মাসে কলকাতা টাউন হলে অনুষ্ঠিত বিশাল সম্মেলন প্রভৃতি নরমপন্থী উপায়ে বঙ্গভঙ্গ পরিকল্পনার বিরোধিতা করা হয়েছিল। এ সকল কৌশলের সার্বিক ব্যর্থতা নতুন ধরনের বিরোধিতা যথা ব্রিটিশ পণ্য বর্জন, রাখি বন্ধন, অরন্ধন ইত্যাদি পন্থা অনুসন্ধানে বঙ্গভঙ্গ বিরোধীদের অনুপ্রাণিত করে।


তাত্ত্বিকভাবে, স্বদেশী আন্দোলনের মধ্যে দুটি মূলধারা শনাক্ত করা যেতে পারে ‘গঠনমূলক স্বদেশী’ এবং ‘রাজনৈতিক চরমপন্থা’। স্বদেশী আন্দোলনকে সফল করার জন্য ‘বর্জননীতি’ ছিল মূল হাতিয়ার। ‘গঠনমূলক স্বদেশী’ ছিল স্বদেশী শিল্পকারখানা, জাতীয় স্কুল, গ্রাম উন্নয়ন ও সংগঠন গড়ার প্রচেষ্টার মাধ্যমে আত্মসংস্থানের ধারা।  প্রফুল্ল­চন্দ্র রায় অথবা  নীলরতন সরকারের ব্যবসায়িক উদ্যোগ, সতীশচন্দ্র মুখার্জী কর্তৃক প্রবর্তিত জাতীয় শিক্ষা আন্দোলন এবং  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক চিত্রিত ঐতিহ্যবাহী হিন্দু সমাজের পুনর্জাগরণের মাধ্যমে গ্রামসমূহে গঠনমূলক কাজের ভেতর দিয়ে এটা প্রকাশ লাভ করে। পুনর্গঠন প্রচেষ্টায় অশ্বিনীকুমার দত্তের স্বদেশ বান্ধব সমিতিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এরূপ অবস্থাকে রবীন্দ্রনাথ আত্মশক্তির উন্নয়ন বলে অভিহিত করেছেন।


রাজনৈতিক চরমপন্থী আদর্শের প্রতি অধিকতর আকৃষ্ট বাংলার উত্তেজিত শিক্ষিত যুবকদের কাছে এর আবেদন অতি সামান্যই ছিল। গঠনমূলক স্বদেশী প্রচারকদের সঙ্গে তাদের মৌলিক পার্থক্য ছিল পন্থা-পদ্ধতি নিয়ে। ১৯০৭ সালের এপ্রিলে  অরবিন্দ ঘোষের পর পর প্রকাশিত কয়েকটি নিবন্ধে এ বিষয়ে বিশদ বিবরণ পাওয়া যায়। পরবর্তীকালে নিষ্ক্রিয় প্রতিরোধ মতবাদ (Doctrine of Passive Resistance) নামে এগুলি পুনর্মুদ্রিত হয়। তিনি ‘সুসংগঠিত ও অব্যাহতভাবে ব্রিটিশ পণ্যের বর্জন, আনুষ্ঠানিক কর্তৃত্বমূলক শিক্ষা, বিচার এবং নির্বাহী প্রশাসন’ সংক্রান্ত কর্মসূচি উপলব্ধি করেন (স্বদেশী শিল্প-কারখানা, স্কুল ও সালিশি আদালতের ইতিবাচক উন্নয়ন দ্বারা সমর্থিত)। একই সঙ্গে আইন অমান্য আন্দোলন, রাজভক্তদের সামাজিকভাবে বর্জন এবং ব্রিটিশের নিপীড়ন সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেলে সশস্ত্র সংগ্রামের আশ্রয় গ্রহণের অভীপ্সাও তাঁর ছিল।


আধুনিকতাবাদী এবং হিন্দু পুনর্জাগরণবাদী ধারার মধ্যে সাংস্কৃতিক মতাদর্শ নিয়ে আরেকটি বিতর্ক সৃষ্টি হয়। সাধারণভাবে স্বদেশী মনোভাব ধর্মীয় পুনর্জাগরণের সঙ্গে রাজনীতিকে সংশ্লিষ্ট রাখার প্রচেষ্টায় ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত ছিল।  সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী দাবি করতেন যে, মন্দিরসমূহে স্বদেশী শপথ পদ্ধতি ব্যবহারকারী তিনিই প্রথম ব্যক্তি। জাতীয় শিক্ষা পরিকল্পনায় প্রায়শ শক্তিশালী পুনর্জাগরণবাদী উপকরণ অন্তর্নিহিত ছিল এবং বর্জনকে কার্যকর করার চেষ্টা করা হয়েছিল ঐহিত্যবাহী বর্ণপ্রথার বিধিনিষেধের মাধ্যমে। বন্দে মাতরম, সন্ধ্যা বা যুগান্তরের পাতায় এরূপ আগ্রাসী হিন্দুবাদ প্রায়ই অচ্ছেদ্যভাবে সংযুক্ত থাকত, অথচ সঞ্জীবনী বা প্রবাসীর মতো ব্রাহ্ম পত্রিকাসমূহে এই মতের সমালোচনা করা হতো।


হিন্দু পুনর্জাগরণবাদী ধারার সঙ্গে নতুন প্রদেশ মুসলমানদের জন্য অধিকতর চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করবে এ ধরনের ব্রিটিশ প্রচারণা যুক্ত হয়ে উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মুসলমানদের স্বদেশী আন্দোলন-বিরোধী করে তুলতে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করে। সাম্প্রদায়িক ঐক্যের জন্য গজনবী, রসুল, দীন মোহাম্মদ, দীদার, লিয়াকত হোসেন প্রমুখ স্বদেশী আন্দোলনে বিশ্বাসী মুসলমানদের একটি সক্রিয় গ্রুপের আবেগঘন আবেদন সত্ত্বেও পূর্ববঙ্গে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সংঘটিত হয়েছিল। হিন্দু জমিদার এবং মহাজনদের মধ্যে যারা মূর্তি সংরক্ষণের জন্য ‘ঈশ্বরবৃত্তি’ নামক দস্ত্তরি আরোপ করতে শুরু করেছিল তারাই এই দাঙ্গার লক্ষ্যে পরিণত হয়েছিল। সুতরাং বাংলায় মুসলমান সম্প্রদায়ের এক বিরাট অংশ স্বদেশী আন্দোলন হতে বিরত থাকে এবং মধ্যপন্থী বা চরমপন্থী রাজনীতিতে বিশ্বাসী হিন্দু  ভদ্রলোকগণ এ আন্দোলনে অগ্রগামী ভূমিকা গ্রহণ করে।


আন্দোলনটির স্বতঃস্ফূর্ততার এরূপ একটি সীমাবদ্ধতা রবীন্দ্রনাথ এবং অন্যান্য বিদগ্ধজনের চোখে ধরা পড়েছিল। রবীন্দ্রনাথ যদিও কয়েক বছর ধরে পুনর্জাগরণবাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন, কিন্তু সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদের ফলে ১৯০৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে গভীর উপলব্ধি থেকে পরপর প্রকাশিত কয়েকটি নিবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন যে, দাঙ্গার জন্যে ব্রিটিশদের শুধু দোষারোপ করা ছিল এক অপর্যাপ্ত প্রতিক্রিয়া।


এ সকল সাংস্কৃতিক সীমাবদ্ধতার সঙ্গে সঙ্গে সাধারণভাবে বুর্জোয়া আকাঙ্ক্ষা সম্বলিত কিন্তু প্রকৃত বুর্জোয়াদের বা

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

1 উত্তর
09 মে 2018 "সাধারণ জ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Sajjad Jayed (10,126 পয়েন্ট) 392 2821 3127
1 উত্তর
08 জুন 2018 "ইতিহাস এবং ঐতিহ্য" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Siddique (4,388 পয়েন্ট) 276 1563 1592
1 উত্তর
04 অক্টোবর 2019 "ইতিহাস এবং ঐতিহ্য" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন কামরুল হাসান ফরহাদ (5,894 পয়েন্ট) 395 2066 2190
0 টি উত্তর
1 উত্তর
09 মে 2018 "সাধারণ জ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Sajjad Jayed (10,126 পয়েন্ট) 392 2821 3127

28,156 টি প্রশ্ন

29,682 টি উত্তর

3,147 টি মন্তব্য

3,945 জন সদস্য



আস্ক প্রশ্ন এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে কমিউনিটির এই প্ল্যাটফর্মের সদস্যের মাধ্যমে আপনার প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান পেতে পারেন এবং আপনি অন্য জনের প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান দিতে পারবেন। মূলত এটি বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি অনলাইনে উন্মুক্ত তথ্যভান্ডার গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য।

  1. Jahed hussen

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  2. নাজমুল হুদা

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  3. Rayhan hossen

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  4. Atikul

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  5. Md.sakil

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

শীর্ষ বিশেষ সদস্য

...