তোমার বোনের যে মানসিক অবস্থা, সেটিকে সিগমান্ড ফ্রয়েডের ভাষায় বলা যায় রিগ্রেশন। যার মানে কোনো সংকটময় অবস্থায় প্রাপ্তবয়স্কের মতো আচরণ না করে শিশুসুলভ আচরণে লিপ্ত হওয়া।
মানসিক চাপ যত বেশি বাড়ে, ততই এ ধরনের আচরণগুলো ঘটতে থাকে। কখনো এই আচরণ একেবারে সহজ-সরল শিশুর মতো হয়, আবার কখনো প্রচণ্ডভাবে নেতিবাচক আবেগ প্রকাশের মাধ্যমেও হতে পারে।
শৈশবের অনেক বেদনাদায়ক ঘটনা অবচেতন মনে স্থান নেয়। ভুলে যাওয়া স্মৃতিগুলো মনে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করে। পরবর্তী সময়ে মানসিক চাপমূলক পরিস্থিতি আবার সেই ক্ষতকে উজ্জীবিত করে তোলে। শৈশবে যুক্তিসংগতভাবে চিন্তা করার ক্ষমতা থাকে না বলে শিশুরা ঘটনাগুলো ঠিকমতো বিশ্লেষণ করতে পারে না।
বিয়ের পর একটি নতুন পরিস্থিতিতে খাপ খাওয়াতে গিয়ে সে মানসিক চাপ অনুভব করছে। তার পক্ষে সব সময় স্বাভাবিক আচরণ ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে। বিয়ের আগে তার মানসিক চিকিত্সা নিশ্চিত করা জরুরি ছিল। সেটি না করে তাকে বিয়ের মতো একটি বড় চ্যালেঞ্জের দিকে ঠেলে দেওয়া ঠিক হয়নি।
তোমার বোন তো এমনিতেই মানসিকভাবে একটি দুর্বল জায়গায় ছিল। তাকে যখন অন্যরা ঠিকমতো গ্রহণ করছেন না, তখন সে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তোমরা আর সময় নষ্ট না করে ওকে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করো। সরকারি হাসপাতালগুলোয় মনোরোগ বিভাগে চিকিত্সার ব্যবস্থা রয়েছে।
ঢাকায় এসব হাসপাতালে কাউন্সেলিংয়েরও সুযোগ রয়েছে।
এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের চারতলায় নাসিরুল্লাহ সাইকোথেরাপি ইউনিটে এবং পাঁচতলায় এডুকেশন ও কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগে সেবার ব্যবস্থা রয়েছে। আশা করছি, তোমার নিরীহ-অসহায় বোনটি চিকিত্সা নিয়ে এই মানসিক বিপর্যয়গুলো কাটিয়ে উঠতে পারবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশনাল অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক মেহতাব খানম। তিনি আপনার মানসিক বিভিন্ন সমস্যার সম্ভাব্য সমাধান দেবেন। অল্প কথায় আপনার সমস্যাতুলে ধরুন।—বি. স.
কামরুল হাসান ফরহাদ, সমন্বয়ক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত আছেন আস্ক প্রশ্ন ডট কমের সাথে। নিজের সমস্যার সমাধানের পন্থা নিজেই খুঁজে বের করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে ভালোবাসেন। প্রশ্ন অ্যানসারকে ভালোবেসে নিয়েছেন নিজে জানার ও অপরকে জানানোর জন্য।