আস্ক প্রশ্নে আপনাকে স্বাগতম ! এটি একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। এই সাইট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন ...
156 বার প্রদর্শিত
"স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে করেছেন (4,388 পয়েন্ট) 276 1563 1592

1 উত্তর

0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন (4,388 পয়েন্ট) 276 1563 1592

জন্মের পর থেকে ২৮ দিন পর্যন্ত সময়কালকে নবজাতক পিরিয়ড ধরা হয়। এ সময়টি আপনার এবং আপনার শিশু উভয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভালবাসা আর আদরের মাঝে তার সুস্থ-সুন্দর থাকা নিশ্চিত করতে, নিরাপদ রাখতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কোন বিকল্প নেই।ওর নাজুক কোমল শরীর খুব সহজেই বিভিন্ন রোগজীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। এছাড়া কাঁচা নাভির মাধ্যমে সামান্য অপরিচ্ছন্নতায় ইনফেকশনও হয়ে যেতে পারে।

আপনার ছোট্ট বাবুর ছোট্ট শরীরকে অসুখ থেকে দূরে রাখতে চাইলে তার শারীরিক পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে হবে। তাই এসব টিপস নিয়েই আমাদের এই আর্টিকেল।

জন্মমুহূর্তের পরপর:

হাসপাতালে বা ক্লিনিকে জন্মালে Operation Theatre এ শিশুর গা মুছিয়ে তাকে নরম কাপড়ে মুড়িয়ে দিতে হয়।পরিষ্কার নরম শুকনো কাপড়ে মুছে শিশুর মাথাসহ সমস্ত শরীর শুকাতে হয়। এক টুকরা বড় পরিষ্কার কাপড়ে শিশুকে জড়িয়ে নিয়ে প্রথমে মাথা তারপর গলা, কাঁধ, বুক ও পেট মুছতে হয়। এরপর পিঠ ও কোমর থেকে পায়ের পাতা অবধি। মোছা হলে কাপড়টি ফেলে অন্য আরেকটি নরম কাপড়ে মাথাসহ সমস্ত শরীর (মুখমন্ডল বাদে) জড়িয়ে নিন।

জন্মের সময় শিশু তার ত্বকে একটি প্রাকৃতিক সুরক্ষা-প্রাচীর নিয়ে জন্মায়। এটা হলো এমিওনিটিক ফ্লুইড। এর ওপর ভারনিক্স ক্যাসোসা নামে আরেকটি লেয়ার থাকে । এই পাতলা সাদাটে আবরণটি শিশুর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ছয়-সাতদিনের মধ্যে এটি আপনা আপনি পরিষ্কার হয়ে যায়।  কিন্তু ভুলেও ঘষে মেজে এটি তুলতে যাবেন না।

পরবর্তী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা:

নবজাতকের শরীরের সবটুকুই পরিচ্ছন্ন থাকা জরুরি তবে কয়েকটি বিশেষ অঙ্গের আলাদা যত্ন প্রয়োজন। যেমন নাভি, দুপায়ের ফাঁক, চোখ, নাক ,কান ,নখ এবং জিহ্বা ইত্যাদি।

বাচ্চা জন্মের পর থেকেই তাকে জীবাণু সংক্রমণ থেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য নিচের ১২টি টিপস ফলো করে চলুন।

১। হাত ধুয়ে নিন

শিশুর সংস্পর্শে আসার আগে নিজের হাতটি সবসময় ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। ব্যবহার করতে পারেন জীবাণুনাশক হ্যান্ডওয়াশ অথবা ইন্সট্যান্ট হ্যান্ড স্যানিটাইজার।

শিশুকে কেউ কোলে নেবার আগে তার হাত ধুয়ে নিতে বলুন ৷ এছাড়া শিশুকে পরিষ্কার করার আগে নিজের হাতটি ধুয়ে তবেই স্পর্শ করুন শিশুকে ।

হাত ধুয়ে নিন শিশুর ডায়াপার বা প্রস্রাব-পায়খানা করা কাপড়-কাঁথা পাল্টাবার পরেও।

২।Umbilical cord বা নাভি 

শিশুর জন্মের পরপরই প্লাসেন্টা থেকে কাটা হয় ৷ নাভি কাটার পর ডাক্তাররা তা ক্ল্যাম্প করে বা পেঁচিয়ে ক্লিপের মত প্লাস্টিক বা মেটালের কর্ড ক্ল্যাম্প বা টেইপ লাগিয়ে দেন। এতে নাভিতে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয় আর ইনফেকশনের সম্ভাবনা কমে আসে।

নাভি শুষ্ক রাখুন। যত বেশি শুষ্ক রাখা যাবে তত দ্রুত নাভি শুকিয়ে ঝরে যাবে। এজন্য নাভিকে তেল, সাবান, লোশন, পানি থেকে দূরে রাখুন।  তবে কখনো কখনো ডাক্তাররা নাভিতে আলকোহল দিয়ে মুছে দিতে বলেন। একটি তুলোর বলে বা কটন বাডে এলকোহল লাগিয়ে নিয়ে আস্তে আস্তে নাভি পরিষ্কার করুন।

হয়তো সঠিকভাবেই শুকাচ্ছে কিন্তু তারপরও কখনো কখনো নাভি থেকে বাচ্চার কাপড়ে হলদে দাগ পড়তে পারে ৷ বদলে দিন কাপড় আর ধুয়ে নিন। সাধারণত সাত থেকে চোদ্দ দিনের মধ্যে নাভি শুকিয়ে আপনাআপনি ঝরে যায় ৷

৩।  নবজাতকের নখ

বাচ্চাদের নখ খুব দ্রুত বাড়ে ৷ ওর নখের আঘাতে ওর ত্বকে লাগতে পারে আঁচড়। আঁচড় গভীর হলে ঘা হবার সম্ভাবনা থাকে।

সুন্দর করে কেটে দিন ছোট্ট নখগুলো। শিশু ঘুমিয়ে গেলেই কাটুন তাহলে নড়াচড়ার বা কেটে যাবার ভয় থাকবে না । আর জেগে থাকা অবস্থায় কাটতে চাইলে কারো সাহায্য নিন। তবে খুব বেশি চেপে ধরবেন না । সাধারণ বেবি নেইলকাটার বা কাঁচির মত বেবি নেইলকাটার যেটাই ব্যবহার করুন না কেন ব্যবহারের আগে তা জীবাণুনাশক মেশানো পানিতে একবার ধুয়ে নিন।  বাচ্চাদের নখ সাধারণত নরমই থাকে তবে শক্ত মনে হলে গোসলের পর নখ কাটুন।

৪। শিশুর চোখের যত্ন

বাচ্চার চোখের ময়লা পরিষ্কার করতে ভুলেও খালি হাতে খুটতে যাবেন না। নরম কাপড়ের টুকরো চুবিয়ে নিন কুসুম গরম পানিতে। হালকা করে চেপে পানি ঝরিয়ে মুছে নিন বাচ্চার চোখ।

অনেক সময় অসাবধানে বাচ্চার চোখে বুকের দুধ যেতে পারে। চোখে বুকের দুধ ঢুকে গেলে বাচ্চার চোখে প্রদাহ হতে পারে। তাই সতর্ক থাকুন।

কিছু কিছু শিশুর চোখ থেকে পানি পড়তে থাকে। নরম কাপড়ে বারবার মুছে নিন। এ সমস্যা এক দুই মাস পর ঠিক হয়ে যায়। বেশি সমস্যা মনে হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

৫। নবজাতকের জিহ্বা পরিষ্কার রাখুন

দুধ খাবার কারণে শিশুর জিহ্বায় সাদা আস্তর পড়তে দেখা যায়। পরিষ্কার নরম শুকনো কাপড় ব্যবহার করে মুছে দিন আপনার ছোট্ট সোনাবাবুর জিভ।

৬। বাচ্চার কান পরিষ্কার রাখা

কানের ভেতরে কটনবাডস দিয়ে পরিষ্কার করতে যাবেন না ৷ কানের পর্দায় আঘাত লাগতে পারে। এছাড়া কানের ভেতরে কিছু লোম থাকে যা বাইরের ময়লাকে ঠেলে দেয়। কটনবাডের আঘাত থেকে এদের রক্ষা করা জরুরি।

পরিষ্কার রাখুন কানের উপরিভাগ। কটনবল বা নরম কাপড়ে মুছে দিন।

৭।নাকের যত্ন

কানের মত নাকেও কটনবাডস না দিয়ে নরম সুতি কাপড়ে কোনা পেঁচিয়ে পরিষ্কার করে নিন। এতে শিশুর আঘাত পাবার সম্ভাবনা থাকবে না। নাকে সর্দি বা ময়লা জমে বন্ধ হয়ে থাকলে শিশু মুখ দিয়ে শ্বাসপ্রশ্বাস নেয় এবং দুধ টানতে চায় না। সুতরাং খেয়াল রাখুন এবং পরিষ্কার রাখুন ।

৮। নবজাতকের পোশাক

এ সময় শিশুর প্রজনন অঙ্গ বা জেনিটাল অনেক বেশি নরম কোমল থাকে। শিশুকে যেকোনো পোশাক পরানোর সময় খেয়ালকরুন তা আরামদায়ক কি না।

ছেলেশিশু ও মেয়েশিশুর জেনিটাল এর যত্ন ও পরিচ্ছন্নতায় পার্থক্য রয়েছে ৷

মেয়ে শিশুর ক্ষেত্রে তার যোনিপথের বাইরে ফোলা ফোলা ভাব ও লালচে থাকা স্বাভাবিক। ভেজা নরম পরিষ্কার কাপড় দিয়ে নিয়মিত পরিষ্কার করুন। সামান্য বেবি সোপ ব্যবহার করুন । মুছুন সামনে থেকে পেছনে ( front to back)৷ প্রতিবার ডায়াপার পাল্টানোর পর বা পায়খানার পর এভাবে মুছে সামান্য বেবি অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। মুছতে পারেন ওয়াইপস দিয়েও। ব্যবহৃত ওয়াইপস দ্রুত ফেলে দিন।

ছেলে শিশুর জননাঙ্গের ব্যাপারেও যত্নশীল হোন। পেনিসের মাথায় চামড়ার নিচে ময়লা জমে যায়, তা পরিষ্কার করুন। ভেজা নরম কাপড়ে সামান্য বেবি সোপ লাগিয়ে মুছে নিয়ে পেট্রোলিয়াম জেলি বা বেবি অয়েল লাগিয়ে নিন। তাহলে ডায়াপার বা কাপড়ের ঘষায় ব্যথা পাবে না। এছাড়া আপনি ওয়াইপস (wipes) ব্যবহার করতে পারেন।

৯। ডায়াপার পরানোর সঠিক নিয়ম

ডায়াপার পরানোর আগে যদি ওই জায়গাতে বেবি অয়েল মাখিয়ে নেন তাহলে ডায়াপারের ঘষা থেকে ত্বক সুরক্ষিত থাকবে। অনেকে ডায়াপার পরাবার আগে পাউডার ব্যবহার করেন। কিন্তু পাউডার ব্যবহারে শিশুর ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।

ডায়াপার লাইন খেয়াল করুন এবং পাল্টে দিন প্রয়োজনে। ব্যবহৃত ডায়াপার প্যাচিয়ে প্যাকেট মতো করে ফেলুন এবং দ্রুত ময়লার ঝুড়িতে ফেলুন।

১০।  শিশুকে গোসল করানো

প্রথমবার শিশুর গোসল দেওয়াটা অন্য এক অভিজ্ঞতা ৷ এত ছোট একটা শরীর যাকে ঠিকমত ধরাই মুশকিল ভাবছেন তাকে গোসল দেবেন কিভাবে?

নাভি না শুকানো পর্যন্ত ডাক্তাররা সাধারণত শিশুর গোসল দিতে বারণ করে থাকেন। ততদিন পর্যন্ত আপনি বরং শিশুর গা মুছে দিন। দেখে নিন যা যা লাগবে…

•        তোয়ালে

•        নরম কাপড় ( ভেজানোর জন্য)

•        নরম কাপড় ( গা মোছার জন্য)

•        পরিষ্কার পোশাক

একটা সমতল জায়গায় তোয়ালে পেতে শিশুকে শোয়ান। প্রথমে নরম কাপড় হালকা গরম পানিতে ভিজিয়ে চিপে নিয়ে শিশুর মাথা মুছে দিন। সাথে সাথে আবার শুকনো কাপড় দিয়ে মাথা মুছে দিন। মাথা ভেজা থাকলে ঠান্ডা লেগে যেত পারে। এরপর গলা বুক ও হাত মুছুন।

উল্লেখ্য, আপনার নবজাতককে এইসব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ভেতরে সুরক্ষিত রাখতে পারলে সর্দি, ডায়রিয়া , নাভির ইনফেকশন বা অন্যান্য ইনফেকশনের হাত থেকে আগলে রাখতে পারবেন। যত্নে রাখুন আপনার শিশু ভালবাসায় আর পরিচ্ছন্নতায়।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

1 উত্তর
19 এপ্রিল 2018 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Md. Masud Rana (3,523 পয়েন্ট) 95 358 394
1 উত্তর
10 সেপ্টেম্বর 2019 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন কামরুল হাসান ফরহাদ (5,894 পয়েন্ট) 396 2066 2190
0 টি উত্তর
2 টি উত্তর
22 মার্চ 2018 "ফেসবুক" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Raju Ahamed (1,189 পয়েন্ট) 44 248 281

28,156 টি প্রশ্ন

29,682 টি উত্তর

3,147 টি মন্তব্য

3,946 জন সদস্য



আস্ক প্রশ্ন এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে কমিউনিটির এই প্ল্যাটফর্মের সদস্যের মাধ্যমে আপনার প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান পেতে পারেন এবং আপনি অন্য জনের প্রশ্নের উত্তর বা সমস্যার সমাধান দিতে পারবেন। মূলত এটি বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য একটি প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি অনলাইনে উন্মুক্ত তথ্যভান্ডার গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য।

  1. Info Blog Bn

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  2. Jahed hussen

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  3. নাজমুল হুদা

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  4. Rayhan hossen

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

  5. Atikul

    50 পয়েন্ট

    0 উত্তর

    0 প্রশ্ন

শীর্ষ বিশেষ সদস্য

...